দার্জিলিং জমজমাট
কিছু জিনিস ভালো, কিছু জিনিস খারাপ। যেগুলো ভালো সেগুলো একটু খারাপ হলেও অসুবিধা হত না। কিন্তু যেগুলো খারাপ সেগুলো আরও ভালো করার দরকার ছিল। মেকিংটা বেশ ঝকঝকে। দেখতে বোর লাগে না। ক্যামেরার কাজ খুব ভালো। সেপিয়া টোন দিয়ে পিরিয়ড করার হাস্যকর চেষ্টাটা বাদ দিলে। তবে বাংলার যা বাজেট, ঠিকই আছে। গল্পের ক্ষেত্র অনেকটাই বড় রাখা হয়েছে। অভিনয় সকলেরই ভালো।
মিউজিক বিশেষ করে টাইটেল সংটা ফাটিয়ে করেছে। আমার দারুণ লেগেছে গানটা।
খারাপ লেগেছে চিত্রনাট্য। মাঝারি মানের কাজ। ইদানিং Srijit Mukherjiর সব ছবিতে যেমনটা হয়ে থাকে। 3 নম্বর এপিসোডে এসে বুঝলাম এটা রহস্য সিরিজ। এতক্ষন অবধি মনে হচ্ছিল কমেডি সিরিজ দেখছি। যেখানে জটায়ু প্রধান চরিত্র। খুনের পর আশেপাশে অতগুলো চরিত্র ঘুরছে তাদের কাউকেই সাসপেক্ট বলে মনে হচ্ছে না। রহস্যের জায়গাটা হুট করে শেষ করে দিল। জট পাকাতেও দিলো না, ছাড়াতেও দিল না।
স্ক্রিনপ্লে খারাপ হলেও, সৃজিতের সিনেমায় ডায়লগ বরাবরই ভালো হয়। এখানেও ভালোই ছিল। 14/15 বছরের ছেলেমেয়েদের সিরিজটা ভালোই লাগবে। আমারও খুব যে খারাপ লেগেছে সেরকম না। তবে তলিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, আদতে পুরো সিরিজে রহস্যের বড় অভাব। ফেলুদাকে ডায়লগে যতটা জোরদার করা হয়েছে, খুনের কিনারা কিভাবে সম্পন্ন করছে সেটাতে বেশি ডিটেলিং নেই।
ফেলুদা হিসেবে টোটা লুকে যতটা বাজিমাত করেছে, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ততটাই ছড়িয়েছে। ড্রেস দারুণ হলেও, মেকআপ খুব বাজে, ভ্রূপ্লাক করা, ঠোঁটে গালে লাল রঙ মাখা ফেলুদা একদমই ভালো লাগে না।এই সিরিজে ‘বেশিরভাগ গোয়েন্দাদের কেন বউ বা প্রেমিকা থাকে না’, সেই নিয়ে আলোচনা শুনে খুব ভয় হচ্ছে নেক্সট সিজনে ফেলুদার একটা প্রেমিকা জুড়ে দেওয়াও হতে পারে। সিনেমার শেষে কায়দা করে সৃজিত নিজেকে এশিয়ার বিজিয়েস্ট ডিরেক্টর বলে দিল – এই অহংকার (পড়ুন গাম্বাটপনাটা) অসহ্যকর।
আলাদা করে বলতে হয় রাহুলের কথা। পুলক ঘোষালের মত একটা মূল গল্পে অদরকারী চরিত্রকে এখানে অনেকটা স্পেস দেওয়া হয়েছে, এবং যেটুকু টাইম পেয়েছে রাহুল ফাটিয়ে অভিনয় করেছে।
রেটিং 5.5/10